নারী হয়েও রাসুলের পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতায় একক অবদান খাদিজার (রাঃ)


নবীর বয়স যখন পঁচিশ বছর তখন ঘটেছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা 25 বছর বয়সী এক যুবক বিয়ে করলেন 40 বছর বয়সী এক বিধবা নারীকে একদিকে বয়সের তারতম্য অন্যদিকে আর্থিক সাবলম্বী আরবের বিরল দৃষ্টান্ত বয়স্ক ও বিধবা এক নারীর বন্ধন ইসলামের ইতিহাস কি ইউটার্ন করিয়ে নতুন স্থানে দাঁড় করিয়ে দেয়, এক ব্যবসায়ী নারীর বিয়ে এক দিকে তৎকালীন অন্ধকারাচ্ছন্ন আরবে নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের চলাফেরার স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয় তেমনি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে নারী ও পুরুষ ছিলেন না তার সততার স্বীকৃতি দেয়, বয়স্ক নারী খাদিজা সহ তার একাধিক বিয়ের পেছনে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি উদ্দেশ্য ছিল, যার প্রমাণ ইতিহাসে পাওয়া যায়। নাম খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ প্রায় 22 থেকে 25 বছর বয়সী যুবক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্��াম তার ধনাঢ্য সম্ভ্রান্ত নিয়োগকর্তা 40 বছর বয়সী বিধবা এবং এক ব্যবসায়ীর কন্যা খাদিজার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, এই ছিল তার প্রথম বিবাহ বিবাহের পর উভয় সুখী এবং একগামী হয়, মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অনেক দিক থেকে খাদিজার উপর নির্ভরশীল ছিলেন জীবনের 25 বছর পর থেকে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাদের দুই ছেলে কাসিম ও আব্দুল্লাহ 









যাদের ডাক নাম যথাক্রমে আল তাহির ও আল তায়িব, উভয় অল্প বয়সে মারা যায় এবং চার মেয়ে ছিল জয়নব, রোকাইয়া, উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা, যদিও শিয়া পণ্ডিতরা খাদিজার কন্যাদের পিতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক করেন কারণ তারা তাদের মধ্যে প্রথম তিন জনকে পূর্ববর্তী বিবাহের কন্যা হিসেবে দেখেন এবং কেবল ফাতিমাকে মোহাম্মদ ও খাদিজার কন্যা হিসেবে দেখেন, তাদের বিয়ের সময় খাদিজা যায়েদ ইবনে হারেসা কে দাসী হিসেবে কিনে নেন তারপর মোহাম্মদ(সঃ) এর অনুরোধে যুবকটিকে তার পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন, আবু তালিব ও খাদিজা একই বছরে মারা যান, আরবের হিজাব অঞ্চলের মক্কা নগরীতে খাদিজা 555 মতান্তরে 567 খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন, যিনি সাধারণত খাদিজা নামে পরিচিত ছিলেন ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রথম স্ত্রী এবং প্রথম অনুসারী মুসলিম, খাদিজা ছিলেন মক্কার কুরাইশ উপজাতির নেতা খোয়ালিদ ইবনে আসাদ এর কন্যা এবং নিজ প্রচেষ্টায় একজন সফল ব্যবসায়ী মহিলা, খাদিজাকে মুসলমানরা আমিরুল মুমিনিন বিশ্বাসের মা বলে উল্লেখ করে থাকেন তিনি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নারী ব্যক্তিত্ব খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা তার মেয়ে ফাতিমা আছিয়া এবং মরিয়মসহ ইসলামের চার স্বর্গীয় নারীদের মধ্যে  









একজন, 619 মতান্তরে 620 খ্রিস্টাব্দে খাদিজার বয়স যখন 51 মতান্তরে 63 বছর তখন তিনি মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম জীবনের এই বছর টিকে আমুল হুযন বা দুঃখের বছর হিসেবে বর্ণনা করা হয়, খাদিজার পিতা খোয়ালিদ ইবনে আসাদ ছিলেন একজন বণিক ও আরব নেতা, ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায় তিনি খিজাজ যুদ্ধে 585 খ্রিস্টাব্দে মারা যান আবার অনেকের মতে খাদিজা যখন 595 সালে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে বিয়ে করেন তখন তিনি জীবিত ছিলেন, উম্মে হাবিবা আসাদ নামের এক বোন ছিল খাদিজার মা ফাতিমা বিনতে জাইতা তিনি প্রায় পাঁচশ পঁচাত্তর সালে মারা যান, তিনি কোরাইশের আমির ইবনে লুয়াই এর সদস্য এবং মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর মায়ের তৃতীয় চাচাতো বোন ছিলেন, খাদিজা খুব সফল বণিক ছিলেন কথিত আছে যে কোরাইশের বাণিজ্য কাফেলা ভ্রমণকারীরা যখন গ্রীষ্মকালীন সিরিয়া যাত্রাবাড়ী বা ইয়েমেনে শীতকালীন যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল তখন খাদিজার কাফেলা কোরাইশদের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাফেলাকে একত্রিত করেছিল খাদিজার সাথে যুক্ত সম্মান সূচক উপাধি দিয়েছিল আমিরাতে বা কুরাইশদের রাজকুমারী, ধার্মিক এবং খাদিজা আল কোবরা বা খাদিজা মহান, কথিত আছে যে তিনি দরিদ্রতার খাওয়াতেন এবং বস্ত্র বিতরণ করতেন তার আত্মীয়দের আর্থিকভাবে সহায়তা  









করেছিলেন এবং দুর্বল সম্পর্কের জন্য বিবাহের অলঙ্কার সরবরাহ করেছিলেন খাদিজাকে এও বলা হতো যে তারা প্রতি মাসে বিশ্বাস করতো না বা পূজা করত না যা প্রাক ইসলামী সংস্কৃতির জন্য সাধারন ব্যাপার ছিল, খাদিজা তার বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে ভ্রমন করেননি তিনি অন্যদের একটি কমিশনের জন্য তার পক্ষে বাণিজ্য করার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন, 595 সালে খাদিজার সিরিয়ায় লেনদেনের জন্য একজন সহকর্মীর প্রয়োজন ছিল তিনি সিরিয়ায় বাণিজ্যের জন্য মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ কে বেছে নিয়েছিলেন তার চাচা আবু তালেব ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের অনুমতিক্রমে তাকে খাদিজার এক ক্রীতদাসের সাথে সিরিয়ায় পাঠানো হয় এই কাফেলার অভিজ্ঞতা মোহাম্মদকে আল সাদিক এবং আলামিন বিশ্বাসযোগ্য উপাধিতে ভূষিত করেন, খাদিজা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে নিয়োগ দিয়েছিলেন যার বয়স তখন 25 বছর তিনি খবর পাঠিয়েছিলেন যে তিনি তাকে স্বাভাবিক কমিশনের দ্বিগুণ প্রদান করবেন, তিনি তার এক চাকর মাইসারাকে সাহায্য করার জন্যে পাঠিয়েছিলেন ফিরে আসার পর মাইসারা মোহাম্মদের ব্যবসা পরিচালনা করার সম্মানজনক উপায় এর বিবরণ দিয়েছিলেন যার ফলে তিনি খাদিজার প্রত্যাশার দ্বিগুণ মুনাফা ফিরিয়ে এনেছিলেন,

 








মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আগে খাদিজার সাথে ঘটে যাওয়া বিয়েগুলো নিয়ে শিয়া সুন্নিদের মধ্যে 

রয়েছে নানা মত সুন্নিদের মতে খাদিজা তিনবার বিবাহ করেছিলেন এবং তার স্বামীর ঘরে তার সন্তান ছিল যদিও তার বিয়ের ধারাবাহিকতা নিয়ে বিতর্ক হয় সাধারণত মনে করা হয় যে তিনি প্রথম আতিক এবং ইবনে আব্দুল্লাহ আল মাকজুমি এবং দ্বিতীয় মালিক ইবনে নাবাসী যারগাড়ি ইবনে আত্মা মিমিকে বিয়ে করেন তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর সংসারে দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয় যাদের নাম ছিল হালা এবং হিন্দ ব্যবসা সফল হওয়ার আগেই স্বামী মারা যান, স্বামী আতিক এর কাছে খাদিজা হিন্দা নামে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দিয়েছিলেন এই বিয়ের পর আবারও খাদিজাকে বিধবা হতে হয়েছিল, শিয়াদের মতে ইবনে সাহারাসুফ আল শফিতে আল সাইয়েদাল আল মুরতাদা এবং আল তালকিসে আল সাইক আল তুরসি থেকে উদ্ধৃত করেছেন যে খাদিজা মুহাম্মদকে বিয়ে করার সময় কুমারী ছিলেন উপরন্ত হিজাজের সাস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য মানুষের মধ্যে খাদিজার উচ্চ অবস্থান ও মর্যাদা বিবেচনা করে, এটি অত্যন্ত অসম্ভব হবে যে তিনি  বনু তামিম এবং বনু মাকজুম নামে দুটি নিম্নপর্যায়ের উপজাতি থেকে পুরুষদের বিয়ে করেন, গবেষকদের মতে খাদিজার বোন হালার দুই সন্তান যারা দায়ী অভিভাবক হিসেবে খাদিজার  










কাছে ছিল, হালার স্বামীর মৃত্যুর পর খাদিজা বোন হালা এবং হালার মৃত্যুর পর হালার সন্তানদের দেখাশুনা করেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সাথে বিয়ের বিষয়ে খাদিজা তার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফেল ইবনে আসাদ ইবনে আব্���ুল উজ্জার সাথে পরামর্শ করেন, খাদিজার পিতা আরব সমাজের বিশিষ্ট তাওরাত ও ইঞ্জিল বিশেষজ্ঞ ওয়ারাকা ইবনে নওফেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেছিলেন তবে কেন তা হয়নি তার সম্বন্ধে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি পরিশেষে আবুহালা ইবনে যারারাহ আল মিমির সাথে তার প্রথম বিয়ে হয় আবুহালা খাদিজা দম্পতি হালা ও হিন্দ নামে দু'জন পুত্র সন্তানের জন্ম দেন, হিন্দ সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন হালার কথা জানা যায়নি হীন বদর যুদ্ধ মতান্তরে উহুদ যুদ্ধে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সাথে যুদ্ধে যোগদান করেন, হযরত আলীর শাসনামলে উঠে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি হযরত আলীর পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করেন সেই যুদ্ধে হিন্দ মারা যায়, তবে কেউ কেউ বলেন প্রথম স্বামীর ঘরে খাদিজা তিন সন্তানের জন্ম দেন হীন ও হারিস নামে দুইজন পুত্র এবং জয়নাব নামের একজন কন্যা, হারিস ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তাকে কাবা ঘরের রুকনে ইয়ামিনের কাছে হত্যা করা হয় প্রথম, প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর আতিক ইবনে আবীত ইবনে আল ্মাক্সুমির সাথে খাদিজার দ্বিতীয় বিয়ে হয়,









তবে কাতাদা এবং ইবনে ইসহাকের মতে তার প্রথম স্বামী আতিক এবং দ্বিতীয় স্বামী আবুহালা, ইবনে 

ইসাক এর এইমত ইউনুস ইবনে বকাইর এর বর্ণনায় পাওয়া যায় অবশ্য প্রথমোক্ত মর্টি অধিক গ্রহণযোগ্য ইবনে হাজার আসকালানী বর্ণনায় জানা যায়, আবুল আব্দুল বার সহ আরো অনেক বিশেষজ্ঞই প্রথম মতটি বাক্ত করেছেন, দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে খাদিজা হিন্দা নামে একজন কন্যা সন্তান জন্ম দেন তার ডাকনাম ছিল উম্মু মোহাম্মদ, হিন্দা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, খাদিজা অন্যান্য কুরাইশদের মত একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি ছিলেন অনেক সম্পদশালী এবং সম্মানিত তিনি ব্যবসার জন্য সৎ ও যোগ্য লোক নিয়োগ দেন সেই সময় সততা এবং আমানতদারিতার জন্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বিখ্যাত হয়ে উঠেন তিনি তার চাচা আবু তালিবের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন এবং অনেক ব্যবসায়ী জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, খাদিজা তার গুণের কথা জানতে পেরে তাকে নিজের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নিয়োগ প্রদান করেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কে তার বিশ্বস্ততার সাথে ব্যবসার জন্য সিরিয়ায় প্রেরণ করেন সিরিয়ায় ব্যাপক মুনাফা অর্জন করেন এবং ব্যবসার প্রতিটি হিসাব খাদিজাকে বুঝিয়ে দেন এতে খাদিজা অনেক খুশি হন এছাড়া খাদিজা তার ছোট ভাইয়ের বউয়ের কাছ থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছিলেন  









খাদিজার বান্ধবী ইয়ালারি স্ত্রী নাফিসা বিনতে মানিয়া মোহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর বিবাহের ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছেন তিনি খাদিজার হয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান এরপর দুই পক্ষের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়, তাদের বিয়েতে চাচা আবু তালেব হামজা সহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন সকলের সামনে বিয়ের খুতবা প্রদান করেন আবু তালিব আরবি গদ্য সাহিত্যে এই খুতবা এখনো বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে বিয়ের মোহরানা ছিল 500 স্বর্ণমুদ্রা খাদিজা নিজেই দুই পক্ষের খরচ বহন করেন তিনি দুই অকিয়া সোনা রুপা মোহাম্মদ সাল্লাহ সালামকে দেন যেন তা দিয়ে উভয়ের পোশাকও ওয়ালিমার তথা বৌভাত অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারেন, মূলত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালামের চারিত্রিক সুন্দর যে মুগ্ধ হয়ে খাদিজা তাকে বিয়ে করেন, বিয়ের সময় খাদিজার বাবা বেঁচে ছিলেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে, মোহাম্মদ সাল্লালাহ সালামের ঘরে খাদিজা ছয়জন সন্তানের জন্ম দেন তাদের প্রথম সন্তান কাশেম অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই সন্তানের নাম অনুযায়ী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নাম হয় আবুল কাশেম এরপর জন্ম হয় জয়নবের দ্বিতীয় সন্তান আব্দুল্লাহ  










জন্মগ্রহণ করে ইসলাম ধর্ম আগমনের পর তাই তার উপাধি হয় তাইব বা তাহির, আব্দুল্লাহ অল্প বয়সে মারা যান এরপর জন্মগ্রহণ করেন রুকাইয়া উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা, খাদিজা উকবার দাসী সালামকে সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তৎকালীন আরবের সামাজিক অবক্ষয় যুদ্ধ-বিগ্রহ হিংসা হানাহানি থেকে মানুষের মুক্তি কিভাবে হবে তা নিয়ে চিন্তা করতেন ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন তার স্ত্রী খাদিজা নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী এমন ই একদিনঃ ধানের সময় ফেরেশতা জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে আল্লাহ প্রেরিত বানী নিয়ে আসেন এবং তার কিছু পঙক্তি দিয়ে পড়তে বলেন উত্তরে তিনি(ﷺ) জানান যে তিনি পড়তে জানেন না এতে জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পঙক্তি পড়���ে বলেন কিন্তু এবারও মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন এভাবে তিন বার চাপ দেওয়ার পর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম পঙক্তিটি পড়তে সমর্থ হন মুসলিমদের ধারণা অনুযায়ী এটি কোরআনের প্রথম আয়াত সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত,










বর্ণনায় আরও উল্লেখ আছে প্রথম বাণী লাভের পর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গৃহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেন বারবার বলতে থাকেন আমাকে আবৃত করো খাদিজা নবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাকে নবী হিসেবে মেনে নেন ভীতি দূর করার জন্য মোহাম্মদ কে নিয়ে খাদিজা নির্যাতিত ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফেল এর কাছে যান নওফেল তাকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এভাবে খাদিজা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন, ইসলাম ধর্মের সূচনা লগ্নে মোহাম্মদ কে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছিলেন খাদিজা ধীরে ধীরে খাদিজা সমস্ত সম্পদ মোহাম্মদ(ﷺ) কে দান করে দিতে থাকেন এতে খাদিজা তাকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন এক পর্যায়ে প্রচন্ড অর্থকষ্ট শুরু হয় অনাহারে খোলা মাঠে দিন কাটাতে হয়, নবুয়তের সপ্তম বছরে মক্কার কুরাইশরা মুসলিমদের বয়কট করে তারা সবাই মিলে শিয়াবে আবু তালেব নামক স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে অন্যান্য মুসলিমদের সাথে খাদিজা সেখানে ছিলেন প্রায় তিন বছর তিনি সেখানে ছিলেন তখন গাছের পাতা খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে তাদের খাদিজা তখন কুরাইশদের উপর নিজের প্রভাব খাটিয়ে খাদ্যের ব্যবস্থা করে  











দিতেন মুসলিমদের তার তিন ভাতিজা হাকিম বিন হিজাম, আবুল বক্তারি ও জুময়া বিনতে আসয়াদ তারা সবাই ছিলেন কুরাইশ নেতা এই তিন ভাতিজার মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করতেন খাদিজা এত কষ্ট সহ্য করেও ইসলাম ধর্ম প্রচারে খাদিজা সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে থাকেন একটি বর্ণনা অনুযায়ী কাবা শরীফের কাছে তিনজনকে নামাজ পড়তে দেখা গেল আব্বাস বলেন তাদের একজন আমার ভাতিজা মোঃ অন্যজন আমার ভাতিজা আলী এবং তৃতীয় জন এক মহিলা তার নাম খাদিজা, খাদিজার কবরের উপর নির্মিত শহরটি বর্তমানে ভেঙে ফেলা হয়েছে মোহাম্মদ সালাহ সালামের বিয়ে হওয়ার 25 বছর পর 64 অথবা 52 বছর বয়সের রমজান মাসের 10 তারিখ খাদিজা মক্কায় মারা যান তখন ইসলাম ধর্মে মৃত ব্যক্তির জন্য জানাজার নামাজ পড়ার বিধান ছিল না তাই তাকে জানাজা ছাড়াই মক্কার কবরস্থান জান্নাতুল মোয়াল্লা দাফন করা হয়, মোহাম্মদ সালাহ সালাম নিজেই তার লাশ কবরে নামান, ইসলাম ধর্মে খাদিজার মর্যাদা ও অন্যান্য মহিলাদের চেয়ে অনেক উপরে তিনি প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ব্যক্তি মোহাম্মদ সালাহ সালাম সাথে প্রথম নামাজ তিনি পড়েছিলেন ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী বর্ণিত আছে যে ফেরেশতা জিব্রাইল মোহাম্মদ সাল্লাহ সালামকে বলেন আপনি খাদিজাকে আল্লাহ আমার পক্ষ থেকে দেওয়া সালাম পৌঁছে দিয়েন, বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে বলা হয়েছে পৃথিবীর 

 









শ্রেষ্ঠ মহিলা হলো মরিয়ম ইবনে ইমরান ও খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ আরো বলা হয়েছে জান্নাতে তার মনি মুক্তা তৈরি একটি প্রাসাদের সুসংবাদ দিন, খাদিজা সম্পর্কে মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম বলেন মানুষ যখন আমাকে মিথ্যা উড়িয়ে দিতে চেয়েছে তখন সে আমাকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে সবাই যখন কাফিরছিল তখন সে ছিল মুসলিম, কেউ যখন আমার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি তখন সে আমার সাহায্য করেছে, ইসলামে নারীর অবস্থান নিয়ে যারা সমালোচনা করেন তাদের কানের উপর দিয়ে চলে গেছে খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর ইতিহাস ও অবদান একদিকে নিজের সম্পদের সর্বোচ্চ যেমন বিলিয়েছেন ইসলামের জন্য তেমনি নিভু নিভু ইসলামের প্রদীপের তেল জুগিয়ে প্রচলিত করেছেন ইসলামের বন্নি শিখা প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারী ইসলামকে অনেক বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন তেমনি তার স্বীকৃতিস্বরূপ রাসূল ও নিজ হাতে তাঁর মরদেহ কবরে নামিয়ে তার প্রতি সম্মান দেখেছেন ইসলাম যতদিন পৃথিবীতে টিকে থাকবে ইসলামে নারীর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিবি খাদিজার নাম সোনালী অক্ষরে লিখা থাকবে








আরও পড়ুন



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম