নানা সূচকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে ভারত-পাকিস্তানকে


একইভাবে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে যে উন্নয়ন হয়েছে সেভাবে পিছিয়েছে বেলুচিস্তান। গত ৩০ বছরে ভারত-পাকিস্তানের থেকে নানা খাতে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। উৎপাদন খাতের অগ্রগতি, নারী ক্ষমতায়ন ও নগরায়নসহ নানা খাতে প্রতিবেশীদের পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এটা যেন ভারতের মধ্যে অন্য ভারত। কিন্তু বাংলাদেশে এমন বৈষম্য নেই।  ভারতের তামিলনাড়ু, কর্নাটক, কেরালা যেভাবে এগিয়ে গেছে, উত্তর প্রদেশ ও বিহার সেভাবে এগিয়ে যায়নি।


প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মাথাপিছু আয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলা বাংলাদেশ ভারতের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) নগরীর লেকশোর হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলন ২০২১-এ এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ ইন কমপারেটিভ পার্সপেক্টিভ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়েক সেন । ১৯৯০ সালে ভারতের মাথাপিছু আয় ৩ দশমিক ২৬ হারে বাড়তো এখন কমে ১ দশমিক ১৪ হার হয়েছে। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে বাড়তো অথচ এখন এটা ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ হারে বাড়ছে।
















এটা এখন আরও কমে ০ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। একইভাবে নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মাথাপিছু আয়ে ৯০ দশকে পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। অথচ এখন পাকিস্তানের চেয়ে মাথাপিছু আয়ে ১০ শতাংশ এগিয়ে। উৎপাদন খাতে ভারত-পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নব্বইয়ের দশকে এ খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি ছিল ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। অথচ উৎপাদন খাতে প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। একইভাবে উৎপাদন খাতে পাকিস্তান পিছিয়ে যাচ্ছে। ৯০ দশকে এ খাতে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এখন হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। একই সময়ে ভারতে উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ।




এখন দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। নগরায়নেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের নগরায়ন হার ছিল ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এখন বেড়ে হয়েছে ৩৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। ভারতে একই সময়ে নগরায়নের হার ছিল ২৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশে নগরায়ন বেড়ে চলেছে ভারত পাকিস্তানের তুলনায়। পাকিস্তানের নগরায়নে সেভাবে অগ্রগতি নেই। নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানে নগরায়ন হার ছিল ৩০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এখন হয়েছে ৩৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। 















এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ভারত-পাকিস্তানকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলার অন্যতম কারণ কর্মসংস্থানে নারীর উপস্থিতি বেড়েছে। ৯০ দশকে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানে নারী উপস্থিতির হার ছিল ২৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। একই সময়ে ভারতে নারীর উপস্থিতি ছিল ৩০ দশমিক ২৭ শতাংশ। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এখন হয়েছে ২২ দশমিক ৬৩ শতাংশে। উৎপাদন খাতেও ভারত পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানে কর্মক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি ছিল ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ।


গ্রামীণ উন্নয়নে আমি কাজ করছি। বিনায়েক সেন বলেন, নানা সূচকে ভারত-পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। এসব দেশে যেভাবে আঞ্চলিক বৈষম্য রয়েছে, বাংলাদেশে নেই। তবে বাংলাদেশের সমতলে যেভাবে এগিয়ে গেছে উপকূল ও পাহাড়ি এলাকা সেভাবে এগিয়ে যায়নি। তবে সরকার এসব এলাকা উন্নয়নে কাজ করছে। বাংলাদেশের সামাজিক সূচক অনেক ভালো। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমি হাওরের ছেলে। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, অধ্যাপক নুরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। নগরায়ন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন, কমিনিউনিটি ক্লাব, হাওর উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন প্রকল্পে আমি বেশি নজর দিয়ে থাকি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এসব কারণে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।






















একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম